Concept of global village&it's elements


বিশ্বগ্রামের ধারণা:
বিশ্বগ্রাম- বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরের সেবা প্রদান করে থাকে। মার্শাল ম্যাকলুহান হচ্ছেন বিশ্বগ্রামের জনক ।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদান সমূহ
১। হার্ডওয়্যার – বিশ্বগ্রামে যে কোন ধরণের যোগাযোগ এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত হার্ডওয়্যার। যেমন- কম্পিউটার এবং পেরিফেরাল যন্ত্রপাতি, মোবাইল, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।
২। সফটওয়্যার – কোন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রোগ্রামিং ভাষায় লিখিত নির্দেশনার সমাবেশ কে প্রোগ্রাম বলে। বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য হার্ডওয়্যার এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার যেমন- অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজিং সফটওয়্যার , কমিউনিকেশন সফটওয়্যার ইত্যাদি।
৩। নেটওয়ার্ক বা কানেক্টিভিটি – বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড হলো নেটওয়ার্ক বা কানেকটিভিটি যার মাধ্যমে বিভিন্ন উপাত্ত ও তথ্য এই বিশ্বগ্রামের প্রতিটি মানুষের নিকট পৌছাতে পারে।
৪। ডেটা বা ইনফরমেশন- বিশ্বগ্রামে এই ডেটা বা ইনফরমেশন মানুষের প্রয়োজনে একে অপরের সাথে শেয়ার করা হয়।
৫। মানুষের সক্ষমতা – যেহেতু বিশ্বগ্রাম মূলত তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ,তাই বিশ্বগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য মানুষের সচেতনতা ও সক্ষমতা থাকার প্রয়োজন ।
বিশ্বগ্রামের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
সুবিধা সমূহ–
★স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ ও দ্রুত যোগাযোগ করা যায়।
★পৃথিবীব্যাপী তথ্যের ব্যাপক উৎস সৃষ্টি হয়েছে।তথ্য পাওয়া সহজলভ্য হয়েছে।
★প্রযুক্তি গ্রহণ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
★মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।
★মানুষের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
★ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং লেনদেন সহজ ও দ্রুততর হচ্ছে।
★ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
★ঘরে বসেই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
★অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করার মাধ্যমে কোন বিষয়ে মতামত প্রদান এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাচ্ছে।
অসুবিধা সমূহ–
♦ইন্টারনেট প্রযুক্তির ফলে অনেক ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা বজায় থাকছে না।
♦মিথ্যা তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ রয়েছে।
সহজেই অসত্য বা মিথ্যা এবং বানোয়াট সংবাদ ছড়িয়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
♦প্রযুক্তি পরিবর্তনের কারণে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক শেয়ার করার জন্য অনুন্নত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট
♥উপাদান সমূহ
♥যোগাযোগ
♥কর্মসংস্থান
♥শিক্ষা
♥চিকিৎসা
♥গবেষণা
♥অফিস
♥বাসস্থান
♥ব্যবসা বাণিজ্য
♥বিনোদন
♥সামাজিক যোগাযোগ
♥সংবাদ
♥সংস্কৃতি
♥যোগাযোগ
ব্যবসা–বাণিজ্য– বিশ্বগ্রাম বা আমাদের বিশ্বগ্রামে পরিবর্তিত পৃথিবীতে ব্যবসা-বাণিজ্যের এই ধারণার বা পদ্ধতির ব্যপক পরিবর্তন এনেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য যেতে হচ্ছে না এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে । মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই পণ্যের বাজার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারছে । পণ্য উৎপাদনকারী বা সেবাদানকারী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল পণ্য বা সেবার বিবরণ ছড়িয়ে দিতে পারছেন বিশ্বাজারে । ক্রেতা বা ভোক্তা পণ্য বা সেবা পছন্দ করে অর্ডার দিতে পারেন । মূল্য পরিশোধ করতে পারেন অনলাইনে।
ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়/ বিক্রয় হয়ে থাকে। কিছু ই-কমার্স এর উদাহরণ- alibaba.com, amazon.com, daraz.com.bd rokomari.com ইত্যাদি। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে।

ই–কমার্স এর ধরণঃ পণ্য বিক্রয়ক্ষেত্র ও লেনদেনের প্রকৃতি অনুযায়ী ই-কমার্সকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়। –
Business to Consumer (B2C)
Business to Business (B2B)
Consumer to Business (C2B)
Consumer to Consumer (C2C)
ই–কমার্স এর সুবিধাঃ
♠ব্যবসা পরিচালনায় এবং কেনাকাটা খরচ কম হয়।
♠ই-কমার্সের প্রধানতম সুবিধা হল সময় ও ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে।
♠ঘরে বসে যেকোন পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
♠ঘরে বসে ক্রয়-বিক্রয় কৃত পন্যের মূল্য পরিশোধ করা যায় বিভিন্ন ব্যাংকের ডেবিড-ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, কুরিয়ার সার্ভিস, পোষ্ট অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে।
♠বিজ্ঞাপন ও বিপণন সুবিধা, বাজার যাচাই ও তাৎক্ষণিক অর্ডার প্রদানে সুবিধা ইত্যাদি।
ই-কমার্স এর অসুবিধাঃ
♥দূরবর্তী স্থানের পণ্যের অর্ডার ক্ষেত্র বিশেষে ব্যয়বহুল ।
♥লেনদেনের নিরাপত্তা সমস্যা।
♥রিয়েল পণ্য দেখার সুযোগ থাকে না।
♥ডুপ্লিকেট পন্যের চটকদার বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।
বিনোদন – একটা সময় মানুষের বিনোদনের প্রধান অবলম্বন ছিল স্থানীয় কিছু খেলাধুলা, বিভিন্ন রকম গান বাজনা। সিনেমা, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে বিনোদন মাধ্যমের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে ভিডিও , অডিও শুনা বা ডাউনলোড করা যায়।
উদাহরণ- youtube.com, soundcloud.com ইত্যাদি। অনলাইনের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করেও একাধিক খেলোয়ার বিভিন্ন গেমস খেলতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ – সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি যার কারনে বিশ্ব সাহিত্যের বড় একটা অংশ দখল করে আছে পত্র সাহিত্য। সামাজিক যোগাযোগের জন্য বিশ্বগ্রামের নাগরিকরা ব্যবহার করে Facebook, Twitter বা এই ধরণের ওয়েব সাইট ।বিশ্বগ্রাম নাগরিকের বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগের সফল মাধ্যমই হবে ইন্টারনেট যুক্ত একটি কম্পিউটার ।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মানুষ কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি যন্ত্রের মাধ্যমে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল কমিউনিটি তৈরি করে এবং ছবি , ভিডিও এবং বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করা যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধাসমূহ–
★সংযুক্ত থাকা
★সমভাবাপন্ন মানুষ খুজে পাওয়া
★প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম
★দ্রুতগতিতে তথ্যের বিস্তার
★অপরাধী সনাক্তকরণ ও গ্রেফতার করতে সহায়ক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসুবিধাসমূহ–
♠মিথ্যা অ ভিত্তিহীন তথ্যকে প্রতিষ্ঠিত করা
♠পারস্পারিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ
♠সাইবার সন্ত্রাস
♠আসক্তি
সংস্কৃতিক বিনিময় – মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগের ব্যপকতা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে বিশ্বের সকল রকম সাংস্কৃতির সাথে মানুষের পরিচিত হওয়া সুযোগ ঘটেছে। একে অপরের সাথে তথ্য বিনিময় করার সুযোগ পাচ্ছে বিভিন্ন ধরণের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েব সাইট এর মাধ্যমে। সহজেই অডিও বা ভিডিও বিনিময়ে ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মাঝে সংস্কৃতি বিনিময় ঘটছে youtube, facebook এই ধরণের ওয়েবসাইটের মধ্যমে বিশ্বগ্রামের সকল নাগরিকই হবে সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ।

কর্মসংস্থান- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং কর্মসংস্থানের নতুন দার উন্মোচন করেছে। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে দেশে বসে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন।
আউটসোর্সিং- কোন প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেরা না করে তৃতীয় কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে করিয়ে নেওয়াকে বলা হয় আউটসোর্সিং।

ফ্রিল্যান্সিং- কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং।

ফ্রিল্যান্সার – যখন কোন ব্যাক্তি কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে তখন তাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়।

শিক্ষা– তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে একটি শক্তিশালী টুলস। ফরমাল এবং নন-ফরমাল উভয় পদ্ধতিতেই এটি অত্যন্ত কার্যকর।যে কোনো সময় এবং যে কোন স্থানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে আইসিটির বদেলতে। বিশ্বগ্রামের ধারনায় পৃথিবীতে শিক্ষার আদি ধ্যান ধারণার ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
শিক্ষা গ্রহনের জন্য কোন শিক্ষার্থীকে গ্রাম থেকে শহরে কিংবা একদেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হবে না। এতে সময় ,অর্থ ,পরিশ্রম সাশ্রয় হবে । শিক্ষক ঘরে বসেই শিক্ষা দান করতে পারে । শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। অনলাইনেই পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যাচাই করা যায়। ফলাফলের জন্য শিক্ষর্থীদেরকে যেতে হবে না নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
ইবুক বা ইলেকট্রনিক বুক বলতে ডিজিটাল ফর্মে টেক্সট, চিত্র ইত্যাদি ডকুমেন্ট বইকে বুঝায় যা কোন কম্পিউটার, ট্যাব, ই-বুক রিডার ও স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ব্যবহার করে পড়া সম্ভব।

চিকিৎসা- বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা যা তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর তা আজ মানুষকে এনে দিয়েছে দীর্ঘ এবং সুন্দর জীবন।রোগীকে চিকিৎসালয়ে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে , বিশ্বগ্রামের ফলে চিকিৎসার এই ধারণার বা পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা সেবা প্রদান বা গ্রহনের জন্য কোন ডাক্তার বা রোগীকে এখন আর গ্রাম থেকে শহরে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হচ্ছে না বিশ্বের যে কোন স্থানে বসেই যে কোন চিকিৎসকের সেবা গ্রহণ সম্ভব।
টেলিমেডিসিন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে কোন ভৌগলিক ভিন্ন দূরুতে অবস্থানরত রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক , রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।

গবেষণা- গবেষণা কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিসীম। পূর্বে দেখা যেত, একই বিষয়ের উপর একাধিক বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন। একজন অন্য জনের খবর জানতেন না অথবা কোনো বিজ্ঞানী তাঁর গবেষণা কার্য অসমাপ্ত রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু বর্তমান এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফলে বিজ্ঞানীরা তাদের চিন্তাধারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। পৃথিবীর কোনো একপ্রান্তে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণা শুরু করলে ইন্টারনেটের সাহায্যে সবাই অবগত হয়। তথ্য নিয়ে গবেষণার জন্য গবেষককে ছুটতে হচ্ছে না বড় কোন গবেষণা কেন্দ্রে বা বড় কোন লাইব্রেরিতে । তথ্য নিয়ে গবেষণার জন্য গবেষককে ছুটতে হচ্ছে না এক দেশ থেকে অন্য দেশে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসেই আমরা সকল তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।
অফিস– বর্তমানে বিশ্বগ্রামে পরিবর্তিত হওয়া পৃথিবীতে অফিসের এই ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হতে চলেছে। চাকরিজীবীকে বা সেবাগ্রহীতাকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটে চলতে হচ্ছেনা। পৃথিবীর যে কোন স্থানে বসেই অফিসের কাজকর্ম করা যায় কিংবা সেবা গ্রহণ করা যায়।অফিসের জন্য প্রয়োজন হচ্ছেনা স্থায়ী ঠিকানার বা কোন অবকাঠামোর। বদলে যাচ্ছে অফিসের ফাইল-পত্র সংরক্ষণ ও দৈনন্দিন কাজ করার পদ্ধতি। যে সকল ব্যবস্থা ধারণাগত বিশ্বগ্রামের অফিস ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে-
কম্পিউটার
ইন্টারনেট
ওয়েব সাইট
অফিস অটোমেশন- তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে অফিসের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ তথা বাস্তবায়ন কার্যক্রম দক্ষতার সাথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায়। এই ধরণের প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রমকে বলা হয় অফিস অটোমেশন।

বাসস্থান– মানুষ যেখানে বাস করে সেটিই বাসস্থান। গতিনুগতিক এই ধারণা অনেকটাই বদলে যেতে শুরু করেছে। আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে মানুষ এক দেশে বসেই অন্য দেশে ভার্চুয়ালি বিচরণ বা বসবাস করতে পারে । ভিডিও চ্যাটিং এর মাধ্যমে উভয় প্রান্তের লোকগুলো একে আপরকে সামনা সামনি দেখছেন। সকলেই হয়ে উঠছেন ইন্টারনেট অধিবাসী বা নেটিজেন।
হোম অটোমেশন – স্মার্ট হোম এমন একটি বাসস্থান যেখানে রিমোট কন্ট্রোলিং এর সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে কোন বাডির সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম ,হিটিং সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম, লাইটিং সিস্টেম, বিনোদন সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্মার্ট হোমকে হোম অটোমেশন সিস্টেমও বলা হয়।

তথ্যের আদান প্রদানকে বলা হয় যোগাযোগ এবং যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ পরস্পরের সাথে দ্রুতগতিতে যোগাযোগ করতে পারে, তাকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যোগাযোগ ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধন করেছে , সেই সাথে বিশ্বকে গ্রামে রূপান্তরিত করেছে |
যোগাযোগ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে।
যেমন–
১। মৌখিক বা বাচনিক যোগাযোগ
মোবাইল, স্কাইপী, ভাইবার, টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং, রেডিও টেলিভিশন ইত্যাদি।
২। অবাচনিক যোগাযোগ
মুখের বিভিন্ন অভিব্যক্তি, চোখের বা হাতের ইশারা ইত্যাদি।
৩। লিখিত যোগাযোগ
ই-মেইল, এসএমএস ফ্যাক্স ইত্যাদি।
বর্তমানে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলো হলো –
♦মোবাইল ফোন,
♦ই-মেইল,
♦টেলি কনফারেন্সিং,
♦ভিডিও কনফারেন্সিং,
♦রেডিও,
♦টেলিভিশন ইত্যাদি।
মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোন বা সেলুলার ফোন  তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ। মোবাইল অর্থ ভ্রাম্যমান বা “স্থানান্তরযোগ্য”। এই ফোন সহজে যেকোনও স্থানে বহন করা এবং ব্যবহার করা যায় বলে মোবাইল ফোন নামকরণ করা হয়েছে। এটি ষড়ভূজ আকৃতির ক্ষেত্র বা এক-একটি সেল নিয়ে কাজ করে বলে এটি “সেলফোন” নামেও পরিচিত। মোবাইল ফোন বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বলে অনেক বড় ভৌগোলিক এলাকায় এটি নিরবিচ্ছিন্নভাবে সংযোগ দিতে পারে।শুধু কথা বলাই নয়, আধুনিক মোবাইল ফোন দিয়ে আরো অনেক সেবা গ্রহন করা যায়। এর উদাহরণ হচ্ছে খুদে বার্তা -এসএমএস বা টেক্সট মেসেজ সেবা, এমএমএস বা মাল্টিমিডিয়া মেসেজ সেবা, ই-মেইল সেবা, ইন্টারনেট সেবা, অবলোহিত আলো বা ইনফ্রা-রেড, ব্লু টুথ সেবা, ক্যামেরা, গেমিং, ব্যবসায়িক বা অর্থনৈতিক ব্যবহারিক সফটওয়্যার ইত্যাদি। যেসব মোবাইল ফোন এইসব সেবা এবং কম্পিউটারের সাধারন কিছু সুবিধা প্রদান করে, তাদেরকে স্মার্ট ফোন নামে ডাকা হয়।

ই-মেইল – ই-মেইল হচ্ছে ইলেকট্রনিক বার্তা। অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক যন্তপাতি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে বার্তা আদান-প্রদান করার পদ্ধতি হচ্ছে ই-মেইল। ডাকযোগে চিঠি পাঠানোর জন্য যেমন একটি ঠিকানা থাকতে হয়, ঠিক তেমনি ই-মেইল ব্যবহারকারী প্রত্যেকের অদ্বিতীয় ঠিকানা থাকতে হয়। উদাহরনঃ mizanjust@gmail.com

টেলিকনফারেন্সিং- বিভিন্ন ভৌগোলিক দূরুতে অবস্থান করে ব্যক্তিবর্গ টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি যেমন টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি ব্যবহার করে সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল হলো টেলিকনফারেন্সিং। টেলিকনফারেন্সিং ব্যবস্থায় কোনো সভায় অনুমোদিত সকলকে সশরীরে উপস্থিত না থেকেই বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে উক্ত সভায় অংশগ্রহন করতে পারে। ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয়ী হয়।

ভিডিও কনফারেন্সিং- বিভিন্ন ভৌগোলিক দূরুতে অবস্থান করে ব্যক্তিবর্গ কমিউনিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও এর যুগপৎ উভমুখী স্থানান্তরের মাধ্যমে যোগাযোগ বা সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল হলো ভিডিও কনফারেন্সিং। স্কাইপী , ফেসবুক মেসেঞ্জার ইত্যাদির মাধ্যমে খুব সহজেই ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়।

রেডিও- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হলো রেডিও। রেডিও কমিউনিকেশন ব্যাবস্থায় শব্দকে তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গে রূপান্তরিত করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানো হয়। এই ব্যাবস্থায় রেডিও ট্রান্সমিটার , রেডিও রিসিভার এবং এন্টেনা থাকে। রেডিও কমিউনিকেশন ব্যাবস্থায় প্রধানত এএম, এফএম ও মাইক্রোওয়েভ ব্রডকাস্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় হলো এফএম রেডিও।
AM stands for amplitude modulation
FM stands for frequency modulation
টেলিভিশন- টেলিভিশন একটি জনপ্রিয় মাধ্যম । যার মাধ্যমে একমুখী তথ্য সম্প্রচার করা যায়। এই ব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে সংকেত পাঠানো হয় এবং ঐ সম্প্রচার কেন্দ্রের আওতাধীন সকলে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রোগ্রাম দেখতে পারে। TV standards –
NTSC- National Television System Committee
PAL – Phase Alternation by Line

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.