Wireless Medium
তারবিহীন মাধ্যম তিন ধরণের। যথা:
১। রেডিও ওয়েভ
২। মাইক্রোওয়েভ
৩। ইনফ্রারেড
রেডিও ওয়েভ – ১০ কিলোহার্টজ থেকে ১ গিগাহার্টজের মধ্যে সীমিত ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক স্প্রেকট্রামকে বলা হয় রেডিও ওয়েভ। এক্ষেত্রে প্রতিটি কম্পিউটার একই ফ্রিকুয়েন্সিতে সেট করা থাকে যাতে এগুলো অন্য কম্পিউটার থেকে সিগনাল গ্রহন করতে পারে। রেডিও ওয়েভ দুই ধরণের। একটি হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত , অন্যটি হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত। নিয়ন্ত্রিত রেডিও ওয়েভ সরকারের অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারে না।
রেডিও ওয়েভ তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত। যথা:-
লো-পাওয়ার সিঙ্গেল ফ্রিকোয়েন্সি: শুধু একটি ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে যা ৭০ মিটার বা ২৩০ ফুটের মধ্যে ট্রান্সমিশন উপযোগী। ট্রান্সমিশন গতি ১ থেকে ১০ এমবিপিএস।
হাই-পাওয়ার সিঙ্গেল ফ্রিকোয়েন্সি: অনেক বেশী জায়গা পর্যন্ত সিগনাল পাঠানো যায়। চলার পথে কোনো বাধা থাকলে তা ভেদ করতে সক্ষম। ট্রান্সমিশন গতি ১ থেকে ১০ এমবিপিএস।
স্প্রেড স্পেকট্রাম: সিঙ্গেল ফ্রিকুয়েন্সি ট্রান্সমিশনে কেবল একটি ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হয়, আর স্প্রেড স্পেকট্রাম রেডিও ট্রান্সমিশনে একাধিক ফিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হয়।
রেডিও ওয়েভ এর ব্যবহার-
১। রেডিও বা বেতার যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়।
২। মোবাইল যোগাযোগের লিংক স্থাপনে।
৩। টেলিভিশন ব্রডকাস্টিং।
৪। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য টাওয়ার টু টাওয়ার রেডিও লিংক ব্যবহার করা হয়।
মাইক্রোওয়েভ – মাইক্রোওয়েভ এক ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ যা সেকেন্ডে প্রায় ১ গিগা বা তার চেয়ে বেশিবার কম্পন বিশিষ্ট। মাইক্রোওয়েভ সংযোগ ব্যবহার করে ডেটা, ছবি, শব্দ স্থানান্তর করা সম্ভব। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেম মূলত দুটো ট্রান্সসিভার নিয়ে গঠিত। এর একটি সিগন্যাল ট্রান্সমিট এবং অন্যটি রিসিভ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ হচ্ছে ৩০০ MHz−৩০০GHz। মাইক্রোওয়েভের এন্টিনা বড় কোনো ভবন বা টাওয়ারের উপর বসানো হয় যাতে সিগন্যাল বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে এবং পথে কোনো বস্তু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।
মাইক্রোওয়েভের বৈশিষ্ট্য-
ক. মাইক্রোওয়েভ বাঁকা পথে চলতে পারে না।
খ. মাইক্রোওয়েভ সিস্টেম মূলত দুটো ট্রান্সসিভার নিয়ে গঠিত। এর একটি সিগন্যাল ট্রান্সমিট এবং অন্যটি রিসিভ করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
গ. মাইক্রোওয়েভ মাধ্যমে প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যে কোনো বাধা থাকলে ডেটা ট্রান্সমিট করতে পারে না।
ঘ. মাইক্রোওয়েভের এন্টিনা বড় কোনো ভবন বা টাওয়ারের উপর বসানো হয় যাতে সিগন্যাল বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।
মাইক্রোওয়েভ দুই প্রকার। যথা –
১। টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ
২। স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ : এই ধরণের প্রযুক্তিতে ভূপৃষ্টেই ট্রান্সমিটার ও রিসিভার বসানো হয়। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার দৃষ্টি রেখায় যোগাযোগ করে। কোনো বাধা না থাকলে ১ থেকে ৫০ মাইল পযর্ন্ত ডেটা চলাচল করতে পারে।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ: এক্ষেত্রে সিগনাল পাঠানোর জন্য ভূ-পৃষ্ঠে থাকে স্যাটেলাইট এন্টেনা এবং শূণ্যে তাকে স্যাটেলাইট। মহাশুণ্যে অবস্থিত স্যাটেলাইট ও ভু-পৃষ্ঠের ডিশ এন্টনার মধ্যে দুরত্ব প্রায় ৫০, ০০০ কি.মি।
স্যাটেলাইটের ব্যবহার-
১। টেলিভিশন সিগন্যাল পাঠানোর কাজে।
২। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে।
৩। ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে।
৪। আবহাওয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণে ।
ইনফ্রারেড- ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামের ৩০০ গিগাহার্জ হতে ৪০০ টেরাহার্জ পর্যন্ত ফিকুয়েন্সিকে বলে ইনফ্রারেড। অথবা যে সকল তড়িৎ চৌম্বক বিকিরণের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সীমা ১ মাইক্রোমিটার থেকে ১ মিলিমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত তাদেরকে বলা হয় ইনফ্রারেড ওয়েব বা অবলোহিত বিকিরণ রশ্মি। খুবই নিকট বর্তী দুটি ডিবাইসের মধ্যে যোগাযোগ হয়।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তির ব্যবহার-
১। রেডিও, টিভি, এসি ইত্যাদির রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমে।
২। কম্পিউটারের তারবিহীন কিবোর্ড , মাউস, প্রিন্টার ইত্যাদির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার কাজে।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তির সুবিধা-
১। দামে সস্তা।
২। বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন কম।
৩। স্বল্প দুরুতে(প্রায় ১০ মিটার ) ভালো কাজ করে।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তির অসুবিধা-
১। অধিক দূরুতে ডেটা ট্রান্সমিট করতে পারে না।
২। ট্রান্সমিটার ও রিসিভারের মধ্যে কোন প্রতিবন্দক থাকলে কাজ করে না।
কোন মন্তব্য নেই