Crysurgery


ক্রায়োসার্জারি- ক্রায়োসার্জারি হল এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করে। গ্রিক শব্দ ‘ক্রায়ো’ অর্থ- বরফের মতো ঠাণ্ডা এবং ‘সার্জারি’ অর্থ- হাতের কাজ। ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপি বলা হয়।নিম্ন তাপমাত্রায় ক্রায়োসার্জারি দেহকোষের অভ্যন্তরস্থ বরফ ক্রিস্টালগুলোর বিশেষ আকার বা বিন্যাসকে- ছিন্ন করে দূরে সরিয়ে দেয়। এই পদ্ধতিতে হিমায়িত করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়-
★তরল নাইট্রোজেন
★হিলিয়াম গ্যাস
★আর্গন গ্যাস
★ডাই মিথাইল ইথাইল প্রোপ্রেন ইত্যাদি।
ক্রায়োথেরাপি পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর–
এই পদ্ধতিতে টিউমারের ভেতরের ক্যান্সার টিস্যুতে তাপমাত্রা -১২০ থেকে -১৬৫ সে. নামিয়ে আনতে ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে তরল নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। তাপমাত্রা অত্যধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে ঐ টিস্যুটি বরফপিনণ্ডে পরিণত হয়। ফলে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধের কারণে টিস্যুটির ক্ষয় সাধিত হয়। আবার ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে টিউমার টিস্যুটির ভিতরে হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে টিস্যুটির তাপমাত্রা ২০ c থেকে ৪০ c এ উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ টিউমার টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।
ক্রায়োসার্জারির ব্যবহার-
নিউরোসার্জারি এবং টিউমার বা ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় এবং বেশকিছু অভ্যন্তরীণ শারীরিক ব্যাধি যেমন- লিভার ক্যান্সার , প্রোস্টেট ক্যান্সার , লাং ক্যান্সার ,ওরাল ক্যান্সার। এছাড়া ত্বকের ছোট টিউমার, তিল, আচিল, ত্বকের ছোট ছোট ক্যান্সার ইত্যাদি ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
ক্রায়োসার্জারির সুবিধা
♦প্রথম সুবিধা হচ্ছে আক্রান্ত টিস্যুতে শীতক যন্ত্রটি এমনভাবে লাগানো হয় যাতে- টিস্যুর সবধরণের ক্রিয়াকলাপকে সাময়িকভাবে অকার্যকর করে রাখা যায় এবং চিকিৎসা শেষে টিস্যুকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া যায় ।
♦দ্বিতীয় সুবিধা হচ্ছে এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা যখন নিচে নামানো হয় তখন সংশ্লিষ্ট স্থান হতে রক্ত সরে যায় এবং রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ফলে রক্তপাত হয় না বললেই চলে হলেও সম্ভাবনা খুব কম।
♦তৃতীয় সুবিধা হচ্ছে ক্যান্সার নিরাময়ে বহুল প্রচলিত চিকিৎসায় ব্যবহৃত- কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি এবং বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের মতো চিকিৎসায় এই পদ্ধতির কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
বর্তমানে এই পদ্ধতি ধীরে ধীরে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি এবং অস্ত্রোপচার চিকিৎসার জায়গা দখল করে নিচ্ছে।ফলে ক্যান্সার ও নিউরো রোগীদের কাছে দিন দিন এই পদ্ধতির গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.